বায়ু দূষণ: বাতাস বিষাক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে দিল্লির সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা | Air pollution: All schools and colleges in Delhi are closed due to air poisoning

0
186

AVvXsEiRMprLjlcd6lJlps5nDDezAufK68lJnQjKZgs JrE76LTI4Q vKlfZs qWF34XmsuBsRLT JxzkdKWHcasQy4EaUJkkURdGNnzUPKmW83DppKsDX W XfC6HQFGtH xf2jFMcmmBBuNWoD1klj4FGzCFjFpZrkYdR0AzEi878Mp65PQOkc BRiYL0=s16000

বায়ু দূষণের মাত্রা ক্রমাগত খারাপ হওয়ার কারণে ভারতে রাজধানী দিল্লিতে কর্তৃপক্ষ সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।

আগামী ২১শে নভেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের নির্মাণকাজও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে পরিবহন এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত প্রকল্পগুলোর কাজ এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

এছাড়াও শহরে যে ১১টি কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে, তার মধ্যে মাত্র পাঁচটি চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।দিওয়ালির উৎসবের পর থেকেই দিল্লির বাতাস বিষাক্ত ধোঁয়াশায় ঢেকে গেছে।

বাতাসে ক্ষুদ্র কণা

শহরের বাতাসে ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫ এর মাত্রা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপত্তা নির্দেশনায় যত মাত্রার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার চাইতেও বেশি।

মঙ্গলবারে শহরের কোথাও কোথাও এই মাত্রা ৪০০-এর কাছাকাছি, এমনকি এর বেশিও রেকর্ড করা হয়েছে, যাকে “মারাত্মক” বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

বায়ুর গুণগত মান সূচক বা একিউআই অনুসারে বাতাসে এই কণার মাত্রা শূন্য থেকে ৫০ হলে তাকে “ভাল” আর যদি ৫১ থেকে ১০০ হয় তাহলে তা “সন্তোষজনক” বলে বিবেচনা করা হয়।

মুখে মাস্ক পরে বায়ু দূষণের প্রতিবাদ করছে এক ছাত্রী।


এই কণা মানুষের ফুসফুসে ঢুকে গিয়ে মারাত্মকর রকমের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।দূষণের কারণে দিল্লির বেশ কিছু স্কুল গত সপ্তাহেই বন্ধ করে দেওয়া হয়।

দিল্লির সরকার এও বলছে যে বায়ু দূষণের মাত্রা কমাতে তারা শহরে সম্পূর্ণ লকডাউন জারি করার কথাও বিবেচনা করছে।

যেসব কারণে এই দূষণ

দিল্লির বায়ু দূষণের জন্য নানা কারণকে দায়ী করা হয় – যার মধ্যে রয়েছে পরিবহন এবং শিল্প ও কল-কারখানা। এসব থেকে নির্গমনের পাশাপাশি, ধুলা এবং আবহাওয়ার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী হয়ে উঠেছে এই দিল্লি।

এছাড়া প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে কৃষকরা ফসলের নাড়া পোড়ানোর কারণে শীতকালে দিল্লির বাতাস বিষাক্ত হয়ে যায়। আর এই একই সময়ে দিওয়ালি উৎসবের সময় আতসবাজি পোড়ানোর কারণে বায়ুদূষণের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।

দিল্লি


পরিস্থিতি এবার এতোটাই খারাপ হয়েছে যে আদালতও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।

এছাড়াও শীতের সময় বাতাসের গতি খুব বেশি না হওয়ার কারণে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে, কারণ এসময় দূষণ বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে আটকা পড়ে থাকে।এবছর পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতও কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

সমস্যা সমাধানের জন্য সুপ্রিম কোর্ট “অনতিবিলম্বে জরুরি” ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ও দিল্লির রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর পরই দিল্লিতে বায়ুর গুণগত মানের তদারকি করে যে সংস্থাটি, তারা জরুরি বৈঠকে বসে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ঘোষণা করে।

ফসলের মাঠে খড় এবং নাড়া পোড়ানোকেও এই বায়ু দূষণের জন্য দায়ী করা হচ্ছে।


ফসলের মাঠে খড় এবং নাড়া পোড়ানোকেও এই বায়ু দূষণের জন্য দায়ী করা হচ্ছে।আরো যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দিল্লিসহ প্রতিবেশী ‌আরো কয়েকটি রাজ্য উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থানে ২১শে নভেম্বর পর্যন্ত ট্রাক প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী ট্রাক এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

এছাড়াও তারা দিল্লি এবং অন্যান্য রাজ্যের বেসরকারি অফিসগুলোকে নির্দেশ দেয় যেন তারা তাদের কর্মীদের ৫০ শতাংশকে বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে।

তারা আশা করছেন, এর ফলে পরিবহন চলাচল কম হবে যে কারণে নির্গমন ও ধুলার মাত্রাও হ্রাস পাবে।ভারতে এই বায়ু দূষণের সমস্যা শুধু রাজধানী দিল্লির মধ্যেই সীমিত নেই।আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বায়ু দূষণের ওপর যেসব র‍্যাংকিং প্রকাশ করে – তার তালিকায় ভারতের শহরগুলো প্রায়শই স্থান করে নেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইন্সটিটিউট বলছে, বায়ু দূষণের কারণে দেশটিতে প্রতি বছর দশ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here