রকেট হামলার সেই জাহাজ থেকে বাংলাদেশি নাবিকদের আকুতি (ভিডিও) | Bangladeshi sailors beg from rocket ship (video)

0
315

AVvXsEio1EfhKNqs etCPH KcBzFB MfL7Hgof1lTUvXC8Apq0Bx k6DCtDplBAMOpZocXymtHZVc6Y1jY6jMa0RAJyFTYHkgt6l6WsDSdI3mX q4NE2A83DjRtrDqZqbqH91aQdB4PQlzC blDtk2WYN6 xERRiBl5XEbNKwy44xxYYhNy436ZIT 7776i2=s16000

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ থেকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে দুটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন নাবিকেরা।

তারা জানিয়েছেন, তারা সবাই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। জাহাজে পাওয়ার সাপ্লাই নেই। জরুরি পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে তারা চলছেন। সেটা বন্ধ হয়ে গেলে তাদের জাহাজে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এক নাবিককে বারবার বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের বাঁচান। আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি।’
 
এর আগে বুধবার (২ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায়) বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।
উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে ভিডিও বার্তা দেওয়া এক বাংলাদেশি নাবিক নিজেকে জাহাজের দ্বিতীয় প্রকৌশলী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে একটু আগে রকেট হামলা হয়েছে। একজন অলরেডি ডেড।’
২৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে তিনি বলেন, ‌‘আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই চলছে। আমরা মৃত্যুর মুখে সম্মুখীন। আমাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে। দেখেন।…আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি। আমাদের বাঁচান।’

 
ভিডিওটি জাহাজের একটি কক্ষ থেকে করা হয়েছে। সেখানে আরও ১২ নাবিককে দেখা যায়।
আসিফুল ইসলাম নামে জাহাজটির অপর এক নাবিক আরেকটি ভিডিওতে বলেন, ‘আমি আসিফুল ইসলাম আসিফ।…আমরা নাকি পোল্যান্ডে চলে গেছি নিরাপদভাবে। এটা ভুল নিউজ। আমাদের প্লিজ এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।’
ফেসবুকে পোস্ট করা ৩১ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে আসিফুল ইসলাম নিজেকে জাহাজটির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকার থেকে যেভাবে আসবে, সেভাবেই অবস্থা বুঝে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ধরনের সুযোগ এলে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এখন রাত তাই আর কথা হয়নি। হামলায় জাহাজের নেভিগেশন গেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
AVvXsEgy68EWVOGhVt7UFhLAqHNG3j6TeL30QSf5DusbZptAuwTGU Q7xnFSaOgQm0kYmzmAGgpxvW7XJYy26hEjrJxEByJ

এই মুহূর্তে তাদের জাহাজ থেকে বের করে আনা যাবে কি-না এই প্রশ্নের জবাবে শিপিং কর্পোরেশনের এই কর্মকর্তা বলেন, এ মুহূর্তে বাইরে কোনো নিরাপত্তা নেই। কেউ নিরাপত্তা দিচ্ছে না। এখনো সবাই জাহাজে আছেন। বাইরের চেয়ে জাহাজের ভেতরেই নাবিকরা বেশি নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে। জাহাজে তো পাওয়ার, জ্বালানি তেল, খাবার সবকিছুই ঠিক আছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকার থেকে যেভাবে আসবে, সেভাবেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে অবস্থা বুঝে। কোনো ধরনের সুযোগ এলে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
তিনি বলেন, জাহাজে যে খাবার আছে তা দিয়ে নাবিকরা এক মাস চলতে পারবেন। জরুরি অবস্থায় তা আরও বেশি দিন থাকা যাবে। 
জাহাজে হামলা হলো এরপরও জাহাজ কতটুকু নিরাপদ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণ অবস্থায় নিরাপদ। অন্য কোনো সমস্যা নেই। 

 
হামলার পরে আর কোনো ধরনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি বলে জাহাজে থাকা নাবিকদের বরাতে জানিয়েছেন তিনি।
 
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হয়ে যাওয়ায় ২৯ নাবিকসহ সেখানেই আটকা পড়ে জাহাজটি। এখন সেখানে ২৮ নাবিক রয়েছেন। ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে তাদের ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে হামলায় নিহত নাবিকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা। বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও আমেনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে হাদিসুর।
AVvXsEjtp3P0GCEkMa7DEc9oZl0LeBHQTNF1 hT mhr x9MMLDMhrgc9QY fZhn7Fdx1QEL1j uykgcwmeaudlgS2NbADO Yjbfz1ZIa4CmAAXkJtdtisthIsJZof3rw1xHbCAcL wmIVTb8jQ5Ew71cJPBV2j XLletjy ggmMhMZKdZ41ppP 6UhZZQeaB=s16000

তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বোন সবার বড়। এরপর হাদিসুর রহমান। তার ছোট দুই ভাই লেখাপড়া করেন বরগুনায়। হাদিসুর রহমানই শুধু উপর্জন করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। ছেলের লাশ দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তারা।
তবে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আপাতত মরদেহ আনার বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান।
একই কথা জানান বরগুনা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here