রহিমার ভালোবাসার টানে কেশবপুরে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার হোগল’র বসবাস | Rahima fell in love with Keshabpur Hoggle, an American engineer, lives

0
111

AVvXsEgckAtqsHH3jkj7BfZTrxgVgtYcGeG6PFBpudupnRVK1lw2b38iE xcutp5DDn 7EAJp jzRVX7PJgQjXkiS BQKYl57jHl62irxjo4uNsx

কেশবপুরের প্রেমিক রহিমার ভালোবাসার টানে কেশবপুরে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার হোগল’র বসবাস। রহিমা বলেন, ‘ প্রজন্মে কাছে ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই আমরা।’ হোগল বলেন, ‘আমি বহু দেশ ঘুরেছি। 

সত্যি বলতে, বাংলার প্রকৃতিকেে ভালোবেসে ফেলেছি। স্থানীয়দের উন্নয়নে কাজ করার ইচ্ছা আমার। ভালোবাসা দিবসে আম গোলাপ বিনিময় করব, কেক কাটবো কপোতাক্ষের তীর ঘেঁষে দুজন হাঁটবো এভাবেই চোখে চোখ রেখে আমৃত ‘ভালোবেসে, সখী নিভৃত যতনে আমার নামটি লিখো- তোমার মনের মন্দিরে’-কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের এই গান যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে কেশবপুরের নিভৃত পল­ী মেহেরপুরে বাঙালি নারী রহিমা ও মার্কিন প্রকৌশলী ক্রিস্টফার মার্ক হোগলের জীবনে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তাঁরা একে-অপরকে গোলাপ ফুল বিনিময় করাসহ কেক কাটেন।

রহিমা খাতুন কেশবপুরের মেহেরপুর গ্রামের মেয়ে। তাঁর প্রেমে পড়ে আমেরিকার পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস্টফার মার্ক হোগল এখন কেশবপুরের অজপাড়াগাঁ মেহেরপুর গ্রামে এসে বসবাস করছেন। রহিমাকে বিয়ে করে আর ফিরে যাননি তিনি আমেরিকায়। ক্রিস্টফার মার্ক হোগল এখন আয়ুব হোসেন নামে পরিচিত। তাঁরা একে-অপরকে ভালোবাসার বন্ধনে বাকি জীবন মধুকবির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ তীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গড়ে ওঠা মেহেরপুর গ্রামেই থাকার জন্য একটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি গড়ে তুলেছেন। ক্রিস্টফার মার্ক হোগলের সুন্দর ব্যবহারে এলাকার মানুষও মুগ্ধ। রহিমা ও হোগলের মধ্যে অটুট ভালোবাসা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। 

AVvXsEg1GneA6IKLZo fN qMVNDrSngehasCf1cbGtJmiZ geqkc A0PBW982SejU3ykx2tYoLdGH8wPHhmTz5x7BRKocF T6sS1uRV LE3SCk8v0HEhCpGjndE2IJrZPzZjhsvGPm2u xQlYF21rUXcO6e0EIMW Fz6diBeOQlCT qPt566cO4DmiFpfj=s16000

সরেজমিন মেহেরপুর গ্রামে রহিমা ও ক্রিস্টফার মার্ক হোগলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বিদেশী শেতাঙ্গ হোগলের শরীরে ট্যাটু আঁকা। একটু এগিয়ে এসে ক্রিস্টফার মার্ক হোগল ওরফে আয়ুব হোসেন আমাদের আধো উচ্চারণে সালাম দিলেন। ওই সময় রহিমা বাড়িতে ছিলেন না। কিছু সময় পর রহিমার পুত্রবধূ এসে হাজির। তাকে রহিমা কোথায় গেছে জানতে চাইলে বলেন ধান ছাটাই করতে। কথা চলাকালেই রহিমা ভ্যান ভর্তি চাল নিয়ে হাজির। হোগল এগিয়ে গিয়ে ভ্যানটি ঠেলে এগিয়ে নিয়ে আসে এবং ভ্যানের উপর থেকে চালের বস্তা নিজেই কাঁধে করে নিয়ে ঘরে উঠালেন। এই কায়িক শ্রমে মার্কিন ইঞ্জিনিয়ারকে ক্লান্ত মনে হলো না। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানায়, তার বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে, পেশায় তিনি পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। রহিমা খাতুনের সঙ্গে ভারতের আসানসোলে তাঁদের প্রথম পরিচয় হয়। পরিচয়েই তাঁরা একে-অপরকে ভালোবেসে ফেলেন। ভালোবাসার একপর্যায়ে ছয় মাস পর তারা ২০১০ সালের ১০ এপ্রিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ক্রিস্টফার মার্ক হোগল নিজেকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন পুরোপুরি।

AVvXsEggW9yiDbp7ue8abnnsFI6CgJR8vb0KAjE4r7Bsne7ZZQQK7ofHMXS03rVfvyJfRq1fSFIfalSCRHO82ndbmihvlciXHmkgyNUFlKSscqYp9axXhw UzUXkOhmIUbgB3 ypc ltzgYkW605YKEz q2CwSRZV658BYN0WJGd UcH7RVszsIm3uDPYu N=s16000

রহিমা জানান, শৈশবেই তাঁর বাবা আবুল খাঁ ও মা নেছারুন নেছা অভাবের তাড়নায় ভারতে পাড়ি দেন। তাঁদের সঙ্গী হন তিনিও। পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে তাঁর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। বাবা ছিলেন শ্রমিক। অভাবের কারণে ১৩ ১৪ বছর বয়সেই কিশোরী রহিমাকে তাঁর বাবা বিয়ে দেন। সেখানে রহিমার তিন সন্তানের জন্ম হয়। দরিদ্র রহিমাকে একসময় ছেড়ে যান তাঁর স্বামী। বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে রহিমাও চলে যান মুম্বাইতে। কাজের সন্ধানে আশ্রয় নেন বস্তির খুপরিতে। তখন তিনি জীবিকার সন্ধানে মুম্বাই শহরে গেলে ক্রিস্টফার মার্ক হোগলের সঙ্গে পরিচয় ও বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাকে নিয়ে হোগল চীনে যান। সেখানে ৫ বছর থাকার পরে হোগলকে নিয়ে নিজের জন্মভূমিতে প্রায় ৪ বছর ফিরে এসে বসবাস করছেন। রহিমা খাতুন স্বামী হোগলের সঙ্গে থাকতে থাকতে ইংরেজি, হিন্দি ও চায়না ভাষা রপ্ত করেছেন। রহিমা মেহেরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খাঁ ও নিছারুন বেগমের মেয়ে। 

AVvXsEi1s2feVOTFv9DL0FMOmJPuuh9UpUqtFS4uR43e2l7EHHm4c7EJ4pw6wbBG9GUKTngnP ZvekNSsMIOzDucDq74tuuVm2vFsDpSVdnipgktDH4K1SwgOeEoel8PlmpCSaudCu6PWX1krHu5e ppitIRCI9SZrCqOR1jC8HdN3mXgRlMUDUHgwid54 u=s16000

হোগলের আমেরিকায় এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। আমেরিকার স্ত্রী সঙ্গে তার অনেক আগেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। আমেরিকার ছেলে-মেয়ের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। রহিমার বড় ছেলের স্ত্রী তামান্না খাতুন বলেন, শ্বশুর ক্রিস্টফার মার্ক হোগল (আয়ুব হোসেন) তাদেরকে খুবই ভালোবাসেন। তার ব্যবহার অত্যন্ত ভালো। এলাকার মানুষের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করে মন জয় করেছেন। তিনি কৃষি কাজসহ গরু-ছাগল পালন করছেন। বাড়িতে ৭টি গরু ও ৯টি ছাগল নিজ হাতে দেখাশোনা করেন। তিনি এবার ১৫ কাটা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। রহিমা খাতুন আরও বলেন, তাঁরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এভাবেই এক-অপরকে ভালোবেসে থাকতে চান। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here