হলুদ গুড়ার ইতিহাস ও হলুদ গুড়ার উপকারিতা

0
392
হলুদ গুড়া
হলুদ গুড়া

হলুদ গুড়া বা হলদি (বৈজ্ঞানিক নামঃ (Curcuma longa) হলো হলুদ গাছের শিকড় থেকে প্রাপ্ত এক প্রকারের মসলা।ভারত, বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রান্নায় এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি আদা পরিবারের (Zingiberaceae) অন্তর্গত একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।

হলুদ গাছের আদি উৎস দক্ষিণ এশিয়া। এটি ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে জন্মে থাকে। হলুদ গাছের জন্য প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাতের দরকার হয়। বছরে সাধারণত একবার হলুদ গাছের শিকড় তোলা হয়। পরের বছর পুরানো শিকড় থেকে নতুন গাছ গজায়।

হলুদ গাছের শিকড়কে কয়েক ঘণ্টা সিদ্ধ করা হয়, তার পর গরম চুলায় শুকানো হয়। এরপর এই শিকড়কে চূর্ণ করে গাঢ় হলুদ বর্ণের গুঁড়া পাওয়া যায়। এই হলুদ গুঁড়া দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশের খাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহার করা হয়। তবে ঐতিহ্যগতভাবে এই শিকড় ভালোভাবে ধৌতকরণের পর শিল- নোঁড়ায় জল সহযোগে বেটে নিয়ে হলুদের পেষ্ট তৈরি করা হয় যা সরাসরি রান্নায় ব্যবহার করা হয়।

ইতিহাস

হলুদ নামের উৎস আজও অজানা। মহাজাতি বা Genus নাম Curcuma হলুদ নামটা আরবি থেকে আসে। হলুদ হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়া মহাদেশে রান্না শিল্পে ব্যবহার হয়ে আসছে। অন্য দিকে হলুদ একটি ঔষধি গাছ হিসেবে সুপরিচিত।

হলুদ গুড়ার উপকারিতা

১। কাঁচা হলুদ একটি প্রাকৃতিক এন্টিসেপ্টিক। তাই কাঁটা এবং পোড়া জায়গায় হলুদ বাটা লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায় ও তাড়াতাড়ি ব্যথা এবং দাগের উপশম ঘটে।

২। হলুদ যখন ফুলকপির সাথে মিলিত হয় তখন এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং বিদ্যমান প্রস্টেট ক্যান্সারের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়

৩। স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধকারী ও অন্ত্রের ক্যান্সার নিরাময়কারী।

৪। মেলানোমা প্রতিরোধ এবং আত্মহত্যা করতে মেলানোমা কোষ বিদ্যমান হতে পারে.

৫। শিশুদের লিউকেমিয়া ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

৬। হলুদের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য বাত এবং ফোলানো বাত এর জন্য একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা।

৭। হলুদ কেমো ড্রাগ এর প্রভাব এবং তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হ্রাস করে।

৮। গবেষণা দেখা গেছে, হলুদ অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার উপশমে চমৎকার কাজ করে।

৯। টিউমার হওয়া বন্ধ ও নতুন রক্ত উৎপাদন বৃদ্ধি করে।

১০। হলুদের গাঠ পিষে, ঘিয়ে ভেজে চিনি মিশিয়ে কিছু দিন খেলে (নিয়মিত) ডায়াবেটিস সারে। প্রমেহও সারে।

১১। এটি চর্বি বিপাকে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।

১২। দীর্ঘ বিষণ্নতা জন্য একটি চিকিৎসা হিসাবে চীনা দেশে হলুদেরর ঔষধ ব্যবহার করা হয়।

১৩। যেকোনো চর্ম রোগের জন্য হলুদ অনেক উপকারী। কাঁচা হলুদের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে শরীরে মাখলে একজিমা, অ্যালার্জি, র্যা শ, চুলকানি ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১৪। হলুদ মানসিক অবসাদ রোধ করতে ব্যবহৃত অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্টের কাজও করে । এ ছাড়া, এই উপাদানে রয়েছে অ্যাস্পিরিনের গুণ। এর প্রয়োগে ভ্যাস্কুলার থ্রম্বোসিস আক্রান্ত রোগীর রক্তের ঘনত্বের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

১৫। সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয় হলুদ। কাশি কমাতে হলে হলুদের রস খেয়ে নিন কয়েক চামচ, কিংবা এক টুকরো হলুদের সাথে মধু মাখিয়ে তা মুখের মাঝে রেখে আস্তে আস্তে চুষতে পারেন। সেটা করতে না পারলে এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো, সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। কয়েকবার সেবনেই নিরাময় হবে। কাশি ও গলা ব্যথা উভয়েই দূর হবে।

১৬। হলুদের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা প্রভৃতি নানা পদার্থ রয়েছে। তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যেমন বাচ্চাদের লিউকমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় নিয়মিত কাঁচা হলুদের রস সেবন। প্রতিদিন দুধ বা পানির সাথে হলুদের গুঁড়ো বা রস মিশিয়ে খাওয়া অভ্যাস করলে অনেকটাই সুস্থ থাকা সম্ভব।

১৭। হলুদ গায়ের ত্বক ফর্সা ও লাবণ্যময় করে তোলে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেলে, ধীরে ধীরে ত্বকের রঙ ফর্সা হয়।

১৮। হলুদের অন্য এক উপাদান ‘পলিফেনল’ চোখের অসুখ ‘ক্রনিক অ্যান্টিরিয়ার ইউভেইটিস’ সারাতে কর্টিকোস্টেরয়ডের কাজ করে। উল্লেখ্য, এই রোগের প্রকোপে চোখে প্রচণ্ড জ্বালা ও প্রদাহ দেখা যায়।

১৯। মুখে জ্বালা-পোড়া করলে গরম পানির মধ্যে হলুদের পাউডার মিশিয়ে কুলকুচি করুন।

২০। শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলে পানির মধ্যে হলুদের পাউডার মিশিয়ে লাগাতে পারেন।

লোক ঔষধ এবং ঐতিহ্যগত ব্যবহার হলুদ গুড়া

রোদে পুড়ে বা অন্য কোনও কারণে ত্বকের রঙ কালো হয়ে গেলে হলুদ ভীষণ চমৎকার কাজে দিবে। সামান্য পরিমাণ শসার রস নিন, তাতে অল্প একটু হলুদ বাটা বা গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন ও মুখে লাগান। ১৫/২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহারেই উপকার পাবেন। মুখে হলুদের দাগ দূর করা নিয়ে চিন্তিত হলে ব্যবহার করুন দুধ। তুলা দুধে ভিজিয়ে পরিষ্কার ত্বকের উপর বুলিয়ে আনুন। হলুদ দাগ উঠে যাবে।

সাধারণ কাঁটাছেঁড়ায় হলুদ এন্টিসেপ্টিকের কাজ করে। খুব হাল্কা উষ্ণ পানি দিয়ে হলুদের পেস্ট তৈরি করে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিন। দ্রুত সেরে উঠবে। যারা হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য হলুদ মহৌষধ। আধা গ্লাস দুধ নিন, তাতে আধ ইঞ্চি পরিমাণ হলুদ দিয়ে চুলায় জ্বাল দিন। দুধের রঙ হলুদ হয়ে গেলেই নামিয়ে নিন ও উষ্ণ অবস্থান পান করুন। প্রতিদিন রাতে এই পানীয় পান করলে হাড় হবে শক্তিশালী ও মজবুত, অষ্টিওপরসিস এর মতন রোগের সম্ভাবনা থাকবে না। এছাড়া এছাড়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এই পানীয় উপকারী। অন্যদিকে মেনপজের পরে মহিলাদের হাড়ের ভঙ্গুরতা নিরাময় করতেও অত্যন্ত কার্যকর।

কৃমি সমস্যায় ভুগছেন, প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদের রস ২০ ফোঁটা নিয়ে তার মধ্যে ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে সেবন করুন। চাইলে সামান্য পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। নিয়মিত সেবনে অচিরেই পরিত্রাণ মিলবে। সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ দেয় হলুদ। কাশি কমাতে হলে হলুদের রস খেয়ে নিন কয়েক চামচ, কিংবা এক টুকরো হলুদের সাথে মধু মাখিয়ে তা মুখের মাঝে রেখে আস্তে আস্তে চুষতে পারেন। সেটা করতে না পারলে এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো, সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। কয়েকবার সেবনেই নিরাময় হবে। কাশি ও গলা ব্যথা উভয়েই দূর হবে।

হলুদের অপকারিতা

অতিরিক্ত সবকিছুই খারাপ, পৃথিবীতে যা কিছু আছে মোটামুটি সব কিছুরই ভালো – খারাপ দুই দিকই আছে। ব্যবহারের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে পরিমিত ব্যবহারে আপনি যেমন অনেক উপভোগ উপকার পাবেন তেমনি অতিরিক্ত ব্যবহারের কিছু কুফল রয়েছে, চলুন জানা যাক অতিরিক্ত হলুদ ব্যবহারের অসুবিধা গুলি।

পেট খারাপ করতে পারে
হলুদে থাকা উপাদানগুলো আপনার হজমে সহায়তা করতে পারে তবে প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করা হলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং পেট খারাপ হতে পারে। হলুদ সাধারনত গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না অতিরিক্ত সেবনের ফলে কিছু লোকের পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, ডায়রিয়ার মতো হালকা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া অনুভব হতে পারে।

হলুদ আপনার রক্তকে পাতলা করে
হলুদ খেলে রক্ত ​​জমাট বাঁধতে পারে। এটি রক্তপাতজনিত অসুস্থতায় লোকেদের রক্তপাত এবং রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। ওয়ারফারিন (কাউমাদিন) এর মতো রক্ত ​​পাতলা ওষুধ গ্রহণকারী লোকদের বেশি পরিমাণে হলুদ সেবন করা এড়ানো উচিত।

হলুদ ব্যবহারে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা হতে পারে
পুরুষরা যখন সরাসরি মুখের সাহায্যে হলুদ গ্রহণ করেন তখন হলুদ টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে শুক্রাণু চলাচলে হ্রাস পেতে পারে। এটি উর্বরতা হ্রাস করতে পারে। বাচ্চা নেয়ার চেষ্টা করছেন এমন লোকেরা খুব যত্ন সহকারে হলুদের ব্যবহার করতে হবে।

হলুদ কিডনি স্টোনসের ঝুঁকি বাড়ায়
খুব বেশি পরিমাণে হলুদ সেবন করার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, কারণ এতে অক্সালেট রয়েছে এই অক্সালেটগুলি ক্যালসিয়ামের সাথে আবদ্ধ হতে পারে ক্যালসিয়াম অক্সালেট তৈরি করতে, যা দ্রবণীয় এবং মূলত কিডনিতে পাথরের জন্য দায়ী।

So,আজকে এই পর্যন্ত । আশা করি ”হলুদ ” নিয়ে লেখাটি আপনার ভালো লাগেছে ।
আপনি যদি 100% ভেজাল মুক্ত হলুদ গুঁড়া নিতে চান,তাহলে হলি ফুড্স ভালো মানের পণ্য বিক্রয় করে । আপনারা নিরভয়ে যাবতীয় মসলা নিতে পারেন ।
হলি ফুড্স এর ম্যানেজার এর নম্বর : 01781-471177

বাংলাদেশের যেকোন প্রান্তে ডেলিভারি করা হয়!
তাই দেরি না করে এখনি অর্ডার করুন

https://holyfoods.net/holy-turmeric-powder-150-gm-jar/

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ।

https://holyfoods.net/