১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা। ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদল সদস্য সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত করে এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডি ৩২ এর বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে। পরে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত খন্দকার মোশতাক আহমেদ অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেসামরিক প্রশাসনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো সামরিক ক্ষমতার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ঘটে। বাংলাদেশের আদর্শিক পটপরিবর্তন বলে বিবেচিত। লরেন্স লিফশুলৎজ এই হত্যাকাণ্ডের সমাগ্রিক ঘটনাবলিকে মার্কিন-পাকিস্তানপন্থী সোভিয়েতপন্থী দুই অক্ষশক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার স্নায়ুযুদ্ধের সহিংস বহিঃপ্রকাশ বলে আখ্যায়িত করেন। ১৫ ই আগস্ট বাংলাদেশের ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড
১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের পরে শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। পরে তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর মুজিব ১৯৭২ সালের ১২ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী তিন বছর উক্ত পদে থাকেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে তিনি রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ।
মূল নিবন্ধ: স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠন ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত নয় মাস ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর সমগ্র বাংলাদেশ বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিল। ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড টীকা ৪,৭,৮, প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব এই ধ্বংসযজ্ঞকে “মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ধ্বংসযজ্ঞ” উল্লেখ করে ৩০ লাখ মানুষ নিহত ও ২ লাখ নারীর ধর্ষণ হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের উচ্চ আশা-আকাঙ্ক্ষা মুজিব সরকারের জন্য পূরণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তে থাকে ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ।
রক্ষীবাহিনী বিতর্ক ও সেনাবাহিনীর অসন্তোষ ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড |
জাতীয় রক্ষীবাহিনী একটি নিয়মিত আধা সামরিক বাহিনী যা নবপ্রতিষ্ঠ বাংলাদেশে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে রক্ষীবাহিনী আইন ১৯৭২ দ্বারা গঠন করা হয়। শুরুতে মুজিব বাহিনী ও কাদেরিয়া বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এই বাহিনীর পত্তন করা হয়।১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ঢাকার শেরেবাংলা নগরে এই বাহিনীর সদরদপ্তর স্থাপন করা হয়। ক্যাপ্টেন এ. এন. এম. নূরুজ্জামানকে রক্ষীবাহিনীর প্রধান করা হয়। বিদ্রোহ দমন এবং আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গঠিত হয়। এটি ছিল একটি বিতর্কিত আধা সামরিক বাহিনী যা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অনুগত ছিল। এটি বেসামরিক জনগণের কাছ থেকে অস্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য গঠিত হলেও অনেকের মতে এটি প্রকৃতপক্ষে মুজিবের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া থেকে রক্ষা করতে এবং আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে। এর কর্মীদের বিরুদ্ধে জনসাধারণ ও আওয়ামী লীগ বিরোধীদেরকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। সামরিক শক্তির প্রভাবের কারণে পাকিস্তান আমলে বাজেটের বেশিরভাগই সামরিক খাতে ব্যয় হত। তবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সে বরাদ্দ কমতে থাকে এবং ১৯৭৫-১৯৭৬ সালের বাজেটে মুজিব সরকার রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির জন্য প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ করে সেনাবাহিনীর বরাদ্দ ১৩%-এ নামিয়ে আনে, যা পাকিস্তান আমলে ছিল ৫০-৬০ শতাংশ। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সামরিক বাহিনীর বাজেট হ্রাস ও দুর্দশার জন্য রক্ষীবাহিনীকে দায়ী করা হলেও তা ছিল ভিত্তিহীন কেননা ১৯৭৩-১৯৭৪ অর্থবছরে রক্ষীবাহিনীর জন্য বাজেট ছিল মাত্র ৯ কোটি টাকা, যেখানে সেনাবাহিনীর জন্য তা ছিলো ৯২ কোটি টাকা এবং পরবর্তীতে ১২২ কোটিতে পৌঁছায়। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেক সেনা তাদের আশানুরূপ পদোন্নতি পাননি বলেও দাবি রয়েছে। এ সকল কারণে সেনাবাহিনীর মধ্যে তৈরি হওয়া ঘনীভূত অসন্তোষ বিদ্যমান ছিল ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ।
১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার। তার মধ্যে পাকিস্তান প্রত্যাগত জওয়ানদের সংখ্যা ২৪ হাজার এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জওয়ান ও নতুন করে রিক্রুটদের মিলিয়ে মোট ছিল ২৭ হাজার। ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড পাকিস্তান প্রত্যাগত অফিসারদের সংখ্যা ছিল ১১ শত এবং রক্ষীবাহিনীর সদস্য ছিল ২০ হাজার ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ।
মি. চৌধুরীর বর্ণনায়, যখন সকাল হয়ে গেছে তখন দেখা যাচ্ছে কোন পলিটিকাল ডিরেকশন আসতেছে না।১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড বঙ্গবন্ধু মারা গেছে, এখন আমরা কী করবো? কার পেছনে দাঁড়াবো? তারা তো খন্দকার মোশতাককে বসিয়ে দিয়েছে। এখন আমরা তাকে ডিসলজ ক্ষমতাচ্যুত করবো এর বিরুদ্ধে গেলে পুরোপুরি যুদ্ধ করতে হবে। কারণ ওরা ট্যাংক বের করে অলরেডি বঙ্গভবনে বসে গেছে, ফার্মগেটের সামনে বসে গেছে, জাহাঙ্গীর গেটের ভেতরে অলরেডি মুভ করছে। পরিস্থিতি অ্যাসেস করতে হচ্ছে। আমরা কি পারবো আমাকে তো জানতে হবে আমার কাছে কত সৈন্য আছে এবং কত অ্যামুনিশন আছে। এতে গিয়া গোলমাল হয়ে গেল। কনফিউশনটা খুব বেশি ছিল।
খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতি হলেও ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলেন অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত ঘাতক জুনিয়র সেনা কর্মকর্তারা ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ।
সে থেকে পরবর্তী প্রায় ১৫ বছর বাংলাদেশের ইতিহাস সেনাবাহিনীর ভেতরে অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান এবং সামরিক শাসনের ইতিহাস ১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ।
১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড আজ জাতীয় শোক দিবস
১৫আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড কর্নেল জামিল তখন সাথে সাথে রওনা হয়েছিলেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ির দিকে। কিন্তু সোবহানবাগ মসজিদের কাছে পৌঁছলে তার গাড়ি রোধ করে অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত সৈন্যরা। সে বাধা উপেক্ষা করে কর্নেল জামিল সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।