পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৭১ কোটি ডলার বা ৯৫ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) সরকার ও সরকারি গ্যারান্টিতে পাওয়া ঋণের যে ৩১৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে তার ২৪৩ কোটি ডলার আসল। বাকি ৭৬ কোটি ডলার সুদ।
বেসরকারি খাতের ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণের মধ্যে চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বেসরকারি খাতের দীর্ঘমেয়াদি ঋণের মধ্যে ১৬২ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণের মধ্যে আরও প্রায় ৬০০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে,পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে ডিসেম্বরের মধ্যে আরও প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু চলতি বছরের প্রথমার্ধে ঋণপ্রাপ্তির যে গতি তাতে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে সর্বোচ্চ ১০-১১ বিলিয়ন পাওয়া যেতে পারে।পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২ সাল পর্যন্ত বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিদেশ থেকে যে পরিমাণের স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিতেন, পরিশোধ তার চেয়ে কম ছিল। ২০১৯ সালে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঋণ নিয়েছিলেন, বিপরীতে ঋণের সুদ ও আসল বাবদ ২ হাজার ৩৫৮ কোটি ৯৬ লাখ ডলার পরিশোধ করেন। পরের বছরে ১ হাজার ৮৯৩ কোটি ডলার ঋণের বিপরীতে পরিশোধ ছিল ১ হাজার ৮৯১ কোটি ডলার। ২০২১ সালে ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি ডলার ঋণের বিপরীতে পরিশোধ হয় ২ হাজার ৯১৫ কোটি ডলার। আর ২০২২ সালে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ৩ হাজার ৭২৫ কোটি ডলারের ঋণ নিয়েছিলেন, বিপরীতে ঋণের সুদ ও আসল বাবদ পরিশোধ করেছেন ৩ হাজার ৬৭৩ কোটি ডলার।পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি সামলাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নেওয়া পদক্ষেপে ঋণ প্রাপ্তি ও পরিশোধের চিত্র পাল্টে গেছে। পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় এসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো দফায় দফায় সুদ হার বাড়ায়। এতে করে ঋণের সুদ হার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঋণপ্রাপ্তিও কঠিন হয়ে গেছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২ সালে জানুয়ারিতে সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) ছিল দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এরপর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নীতি সুদহার বাড়িয়ে দিলে সব ধরনের সুদহারও বেড়ে যায়। গত ৮ আগস্ট এসওএফআরের গড় রেট দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশে। বিদেশি ঋণ পেতে হলে এসওএফআরের সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুদ দিতে হয়।
বিদেশি মুদ্রার সংকটে কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দায়
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে পরিশোধে বিলম্ব হওয়া এবং আমদানি সংকুচিত হওয়াসহ নানান পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ঋণমান কমে গেছে। এতে করে বেসরকারি ব্যবসায়ীদের বিদেশি ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বিপরীতে মেয়াদ না বাড়ায় আগের নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে বেসরকারি উদ্যোক্তারা যে পরিমাণ বিদেশি ঋণ আনছেন, তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। চলতি বছর জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিদেশ থেকে ২১৮ কোটি ডলার স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু এ মাসে তাদের ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে পরিশোধ করতে হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের বেশি। ফেব্রুয়ারিতে ১৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঋণের বিপরীতে পরিশোধ ছিল ২৬৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এভাবে জুন পর্যন্ত প্রতি মাসেই বিদেশি ঋণ প্রাপ্তির চেয়ে পরিশোধ বেশি ছিল। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা মোট ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ নেন, বিপরীতে পরিশোধ করেন ১ হাজার ৬৭৪ কোটি ডলার। এর ফলে চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে ঋণ নেওয়ার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।
ঋণ পরিশোধে এই অতিরিক্ত ৩০৫ কোটি ডলারের জোগান দিতে হয়েছে দেশের ব্যাংকগুলোকে। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য খাতে। ডলার সংকটের এ সময়টাতে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ায় অনেক ব্যবসায়ী আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারেননি। আবার ডলার সংকটের কারণে নিয়মিত টাকার অবমূল্যায়ন করতে হয়েছে।
২০২২ সালের জুনে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ ছিল ২ হাজার ৫৯৫ কোটি ডলার, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে ঋণ পরিশোধের তুলনায় ঋণ প্রাপ্তি কম থাকায় ধীরে ধীরে তা কমে আসছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বেসরকারি পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে খাতের ঋণ কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৪৩১ কোটি ডলারে। চলতি বছর মার্চে এ ঋণের পরিমাণ আরও কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ২১৮ কোটি ডলারে। এ ঋণের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৪০৮ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতের নেওয়া বিদেশি ঋণের মধ্যে ৯৬৯ কোটি ডলার হলো স্বল্পমেয়াদি ট্রেড ক্রেডিট বা বাণিজ্যভিত্তিক ঋণ, এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮১৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার হচ্ছে ক্রেতা ঋণ বা বায়ার্স ক্রেডিট। মূলধনী পণ্য ও সেবা আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা বিদেশি ব্যাংক থেকে এ ঋণ নিয়েছেন। বাকি ঋণের ৭৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ডেফার্ড পেমেন্ট বা বিলম্বিত দায় এবং বিদেশি ব্যাক টু ব্যাক এলসি ৭৭ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। সরাসরি স্বল্পমেয়াদি ঋণ হিসেবে বিদেশি ব্যাংক থেকে ৩৭২ কোটি ৪৮ লাখ ডলার ঋণ এসেছে। সব মিলিয়ে বিদেশি উৎস থেকে দেশের বেসরকারি খাতের নেওয়া ১ হাজার ৪০৮ কোটি ডলার ঋণের মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর, যা বেসরকারি খাতের মোট বিদেশি ঋণের ৬৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বেসরকারি খাতের নেওয়া বিদেশি ঋণের ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশের মেয়াদ এক বছরের বেশি। ডলারের হিসাবে এ ঋণের পরিমাণ ৮০৯ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট শুরুর পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল চলতি বছরের শুরুতেই। জানুয়ারিতে ব্যাংকগুলোর খোলা আমদানি ঋণপত্রের (এলসি) পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৬২ কোটি ডলারে। ফেব্রুয়ারিতে এলসি খোলা কিছুটা কমলেও মার্চে সেটি ৯৮০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এক মাসেই প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়ে গেলে নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি কমাতে সক্রিয় হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ। বিভাগটির পক্ষ থেকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট মুভমেন্ট’ নামে একটি প্রকাশনা তৈরি করা হয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সৃষ্ট সংকটের কারণ নির্ণয় এবং সেটি থেকে উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে এতে বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশের রেকর্ড ১৭ বিলিয়ন ডলারের বিদেশী ঋণ তৈরি হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি উভয় খাত এ ঋণ নিয়েছে। রেকর্ড এ বিদেশী ঋণের ৫৭ শতাংশই তৈরি হয়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যের দায় বিলম্বের কারণে। এ সময় নভেল করোনাভাইরাসসৃষ্ট বৈশ্বিক দুর্যোগের কারণে আমদানি দায় পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ২০২১ সালের মোট আমদানি দায়ের ৩০ শতাংশ বিদেশী ঋণে রূপ নেয়।পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে আমদানি দায় অপরিশোধিত থাকার কারণে স্বল্পমেয়াদি এ বিদেশী ঋণ সৃষ্টি হয়েছে।
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সংকট সৃষ্টির প্রেক্ষাপটও তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর একটি। করোনার আগের পাঁচ বছর দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় ছিল ৭ শতাংশ। জিডিপির এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সরকার ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। রাজস্ব থেকে অর্থের সংস্থান না হওয়ায় দেশী-বিদেশী বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়েও এ সময়ে বিনিয়োগ করা হয়। এ কারণে দেশের জাতীয় সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে বড় ধরনের ব্যবধান তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ হলেও বিনিয়োগ হয়েছে ৩১ শতাংশ। জাতীয় সঞ্চয় ও বিনিয়োগের বড় এ ব্যবধানই দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে ভারসাম্যহীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
গত কয়েক বছর কৃত্রিম উপায়ে ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা। অনেক আগে থেকেই ডলারের বিনিময় হারকে মুদ্রাবাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনেও একই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলের বাজার বিশ্লেষণ করে মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় নমিনাল ইফেক্টিভ এক্সচেঞ্জ রেটের (এনইইআর) ভিত্তিতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৯৭ টাকা ৭২ পয়সা। অন্যদিকে রিয়েল ইফেক্টিভ এক্সচেঞ্জ রেটের (আরইইআর) ভিত্তিতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১৬ টাকা ৩৮ পয়সা। পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে যদিও ওই সময়ে ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫ টাকায় নির্ধারণ করে রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনটি তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সংকটের আভাস তারা চলতি বছরের শুরুতেই উপলব্ধি করেছিলেন। ওই সময় বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে সে সময় বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিলের তথ্যের ভিত্তিতে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে এতে সুস্পষ্টভাবে বিদ্যমান সংকট ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে প্রতিবেদনে পাঁচ ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের সুপারিশ তুলে ধরে বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ। পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে এতে বলা হয়, বিদেশী ঋণ গ্রহণ এবং সেটি পরিশোধের নীতির বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পাদন ও জাহাজীকরণের ব্যয় কমানোর জন্য বিকল্প পথ বের করতে হবে। উদ্যোগী হতে হবে সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের ভিত্তিতে তৃতীয় পক্ষ কর্তৃক এলসি নিশ্চয়তার ফি কমানোর বিষয়েও। আমদানি নীতিও পুনর্বিবেচনার পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার যৌক্তিক অবমূল্যায়নের বিষয়েও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়।
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে এরই মধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্যমতে, আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়েছে প্রায় অর্ধেকে। আবার ডলারের বিনিময় হারও বাজার পরিস্থিতির ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ হতে যাওয়া বিদেশী ঋণ পুনঃতফসিল বা মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়ার বিষয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ তিন মাসের বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিস্থিতি ধরে রাখা সম্ভব হলে আগামী বছর ডলার সংকট অনেকটাই কমে যাবে।
পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত পাঁচ বছরে বিদেশী উৎস থেকে বাংলাদেশের ঋণ দ্বিগুণ হয়েছে। সরকারের নেয়া ঋণের চেয়েও এ সময়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বেসরকারি খাতে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিদেশী উৎস থেকে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫৮১ কোটি ডলার। চলতি বছরের জুন শেষে সরকারি-বেসরকারি খাত মিলিয়ে বিদেশী ঋণের পরিমাণ ৯৫ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন (৯ হাজার ৫৮৫ কোটি) ডলার ছাড়িয়ে যায়।পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশী মুদ্রায় এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি, যা দেশের মোট জিডিপির প্রায় ২২ শতাংশ। বিপুল অংকের এ ঋণের ৭৩ শতাংশ সরকারের। বাকি ২৭ শতাংশ ঋণ নিয়েছে দেশের বেসরকারি খাত পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে।
কিন্তু দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমেই কমছে। বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩.১ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে নাপাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে পাকিস্তানকে ১২ মাসে ঋণ শোধ করতে হবে ।